গণতন্ত্র পূণঃরুদ্ধারে তারেক রহমানই একমাত্র ভরসা

মোঃ নিজাম উদ্দিন

গণতন্ত্র পূণঃরুদ্ধারে তারেক রহমানই একমাত্র ভরসা

গণতন্ত্র ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা স্বাধীন চেতনায় দূর্বার আকাঙ্খা নিয়ে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের বিজয় গৌরবের স্বাধীনতা। স্বাধীন বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটা কি আজ স্বাধীন? ১৯৭১সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাদের কাছে আত্ম সমপর্ণ করেও শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার মহানায়ক। গণতান্ত্রিক নেতা শেখ মুজিবুর রহমান দেশের দায়িত্বভার গ্রহণ করেই তিনি রাতারাতি এতোটাই বদলে গেলেন যে তার নিজ স্বার্থে গণতন্ত্র হত্যা করে ১৯৭৫ সালের ২৫শে জানুয়ারি মহান জাতীয় সংসদে বাকশাল গঠনের আইন পাস করলেন। তার পছন্দের চারটি পত্রিকা ছাড়া বাকী সব পত্রিকা বন্ধ ও  বাকশাল  সমর্থক ছাড়া অন্যান্য সকল রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করলেন। কারো কোন প্রতিবাদ তিনি গায়ে মাখেননি, তৎকালীন সময়ে একজন দেশপ্রেমিক সিরাজ শিকদারকে গুম করা হলো। দম্ভ করে মহান জাতীয় সংসদে শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন কোথায় আজ সিরাজ শিকদার? বাকশালের চরম বিরোধিতা করেছিলেন তৎকালীন জাহাজ ও নৌ পরিবহন মন্ত্রী জেনারেল এমএজি ওসমানী, ব্যারিষ্টার মঈনুল হোসেন ও নুরে আলম সিদ্দিকি বুক চিতিয়ে প্রতিবাদ করে সেদিন তাঁরা জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। শেখ মুজিবুর রহমানের রাষ্ট্র পরিচালনা আর বাকশাল গঠন দেশের মানুষ মন থেকে মেনে নেয়নি। সারা দেশব্যাপি লুটতরাজ অনিয়ম দূর্ণীতিতে দেশের মানুষ ছিল শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায়। এমনই  প্রেক্ষাপটে প্রকৃতি করলো বৈরী আচরণ। একরাতে বদলে গেল অবিশ্বাস্য পরিবর্তন। ১৫ই আগস্ট ১৯৭৫ সালে স্বপরিবারে নিহত হলেন শেখ মুজিবুর রহমান। দেশের বাহিরে থাকা তাঁর দুই মেয়ে ছাড়া বাকী সবাই নিহত হলেন। শেখ মুজিবুর রহমানের অতি নিকট জনেরা তার দাফন কাফন না করে তড়িঘড়ি সরকার গঠনে ব্যস্ত হলেন। বহুল আলোচিত ঘটনা প্রবাহে দেশের প্রয়োজনে দেশবাসীর প্রত্যাশা পুরণে ৭ই নভেম্বর ১৯৭৫সালে ধূমকেতুর মতো বাংলাদেশের ভাগ্যাকাশে আবির্ভূত হলেন একজন সেনা কর্মকর্তা দেশপ্রেমিক জিয়াউর রহমান। সেনাবাহিনী ও দেশপ্রেমিক জনগোষ্ঠির অভূথ্যানে বিপ্লব সংঘটিত হলো। সংহতি প্রকাশ করলো দেশের শান্তিপ্রিয় জনগণ। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হলেন জেনারেল জিয়াউর রহমান। মনে রাখা ভালো ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ পুরো জাতি যখন দিকভ্রান্ত তখন নিজের জীবনের সর্বোচ্ছ ঝুকি নিয়ে তিনি দিলেন স্বাধীনতার ডাক। তার স্বাধীনতার ঘোষণাতে পুরো জাতি আলোড়িত হলো। সংগ্রামী মানুষ পেলো যুদ্ধ জয়ের দিক নির্দেশনা। সেই যুদ্ধ জয়ের মহানায়ক, স্বাধীনতা অর্জনের পরে হয়ে গেলেন অদৃশ্য। ১৯৭৫ সালের পট পরিবর্তনের পর জেনারেল জিয়াউর রহমান আবার প্রয়াস চালালেন রাষ্ট্র মেরামতের। উম্মুক্ত করে দিলেন মানুষের মত প্রকাশের অবাদ স্বাধীনতা। বাকশাল বিলুপ্ত হলে তাঁর কল্যাণে আবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পূণঃজন্ম হলো। তিনি জনগণের কল্যাণমূখী রাজনৈতিক ধারার প্রবর্তক। অসীম সাহস আর দেশপ্রেম নিয়ে দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কঠিন সংগ্রামে নিজেকে জড়িয়ে রাখলেন দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে। নানামূখী কঠিন চাপ উপেক্ষা করে তিনি বিরামহীন ভাবে ছুটে চলেছেন দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে। সততা দেশপ্রেম উন্নয়ন উৎপাদনে কৃষিতে তিনি বিপ্লব ঘটালেন। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন সমুদ্রতটে আছড়েপড়া সাগরের উত্তাল তরঙ্গের মত প্রাণচঞ্চল। তলাবিহীন ঝুড়িতে নতুন শষ্যভান্ডার ঢেলে সাজিয়ে ঝুঁড়িটার তলা মেরামত করেছেন। তিনি দেশময় জাগিয়ে তুলেছিলেন কর্মোদ্যম এবং কর্ম যুগের এক নবজাগরণ। নিজে কুদাল হাতে খাল কাটা কর্মসুচিকে করলেন বেগবান। দেশের প্রতিটি মানুষকে স্বাবলম্বী করতে উদ্যোগ নিলেন। আধুনিক দেশ গড়ার প্রত্যয়ে ২২মে ১৯৭৭ইং তিনি বাংলাদেশের মুক্তির সনদ ১৯ দফা কর্মসুচি ঘোষণা করলেন। যা প্রশংসিত হলো দেশ বিদেশে। তিনি বহিঃবিশ্বের সাথে পারস্পারিক সম্পর্ক সৃষ্টিতে মনোযোগী হলেন। তার নিখাঁদ দেশপ্রেম দায়িত্ববোধ রাষ্ট্র পরিচালনায় দেশ বিদেশে হলেন অনেক সমাদৃত। তিনি ছিলেন সার্কের স্বপ্ন দ্রষ্টা। মুসলিম বিশ্বের কাছে ছিলেন একজন বিশ্ব নেতার মতো। আধুনিক চিন্তা চেতনায় গণতন্ত্রকে বহুমুখী করতে বাংলাদেশের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার শ্রদ্ধেয় গুণীজনদের নিয়ে তার নেতৃত্বে গঠন করলেন রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। তার রাজনৈতিক দর্শন ছিল যুগান্তকারী। এতো অল্প সময়ে রাষ্ট্র পরিচালনায় যে সুখ্যাতি তিনি অর্জন করেছিলেন যা বিশ্ব রাজনীতিতে বিরল দৃষ্টান্ত। জীবনভর লড়াই করতে তাঁর দ্বিধা ছিল না। গণতন্ত্রকে স্থায়ীরূপ দিতে প্রতিপক্ষের নানান সমালোচনা, কুৎসাকে তিনি হাসি মুখে বরণ করেছেন। গণতান্ত্রিক রাজনীতির প্রধান অনুষঙ্গ যে পরমতসহিষ্ণুতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের চরিত্রে তার উপস্থিতি ছিল সূর্যের মতো দেদীপ্যমান। তাঁর আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা ছিল বিশ্ব মোড়লদের কাছে ইর্শ্বনীয়। এক সময় তাঁর জনপ্রিয়তাই তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের উদারতায় শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ফিরে এসে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। ঠিক এমন সময়ে তিনি দেশী বিদেশি চক্রান্তের শীকার হয়ে ৩০শে মে ১৯৮১ সালে প্রসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শাহাদাত বরণ করলেন। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে নিলেন স্বৈরাচারী জেনারেল এইচ এম এরশাদ। শুরু হলো বিএনপির উপর স্টিমরোলার। স্বৈরাচারী জেনারেল এইচ এম এরশাদকে ক্ষমতাচ্যুত করে গণতান্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে আনতে রাজপথে কঠিন আন্দোলনের নেতৃত্বে বেগম খালেদা জিয়ার পাশে সমবেত হলো দেশবাসী। তত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্টার দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দিলেন বেগম খালেদা জিয়া। একসময় তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলও আন্দোলনে একত্রিত হল। আন্দোলন থেকে ওয়াদা ভঙ্গ করে জেনারেল এরশাদের অধীনে নির্বাচনে শেখ হাসিনা অংশ নিলেন। আপোষহীন মনোভাব এবং সাহসীকতার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন বেগম খালেদা জিয়া। ১৯৯০ সালে জেনারেল এরশাদ ক্ষমতাচ্যুত হল। প্রতিষ্ঠিত হলো বহুল কাঙ্ক্ষিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। সেই সরকারের অধীনে ১৯৯১সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারী নিরপেক্ষ শান্তিপূর্ণ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা লাভ করে। আবারও নানামুখী চাপ ও গভীর ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বেগম খালেদা জিয়া দেশটাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে থাকলেন। প্রতিবেশি রাষ্ট্র বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির জন্মের পর থেকে তাদের করদরাজ্য করে তাদের আধিপত্য নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় মরিয়া। অন্যদিকে শেখ হাসিনা ঘোষণা দিলেন বিএনপিকে একদিনের জন্যও শান্তিতে তিনি সরকার পরিচালনার সুযোগ দিবেন না। একটা গণতান্ত্রিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে হরতাল অবরোধ জ্বালাও পুড়াও আওয়ামী লীগ শুরু করলো। ১৯৯৬ সালের ১২ই জুন জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা লাভ করলো। পরবর্তীতে ২০০১সালের ১লা অক্টোবর জাতীয় নির্বাচনে আবার নিরঙ্কুশ সমর্থন নিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলো।

বাংলাদেশ জন্মের পর থেকে আজ অবধি ইন্ডিয়া বাংলাদেশের জনগণের বন্ধু না হয়ে আওয়ামী লীগের বন্ধু থাকার চেষ্টায় ব্যস্ত। তাদের নানাবিধ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট মনোভাবই তার প্রমাণ। ২০০১সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি ক্ষমতায়, অদৃশ্য ইঙ্গিতে বাংলাদেশে বেশ কিছু আলোচিত হত্যাকান্ড সহ জঙ্গি সংগঠন উত্থানে একটা বিশেষ গোষ্ঠী বিএনপিকে রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ করতে গভীর ষড়যন্ত্রে খুব ব্যস্ত ছিল। ফলশ্রুতিতে ২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেনের মতো আলোচিত ঘটনা ঘটে। ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘের বিশেষ দপ্তরে তৎকালীন সেনা প্রধান জেনারেল মঈন ইউ আহমদকে ডেকে নিয়ে বলে দেওয়া হয় তাকে ইন্ডিয়া যেতে হবে, তাদের প্রেসক্রিপশন ফলো করতে হবে। জেনারেল মঈন ইউ আহমদ ইন্ডিয়া গেলেন, ফিরে এসে শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করলেন। দৃশ্যপট বদলে গেলো জরুরি অবস্থা জারি হলো। ইন্ডিয়ার প্রত্যক্ষ তত্বাবধানে সেনাসমর্থিত সরকারের মাধ্যমে অতি সুকৌশলে সুক্ষ স্থুল কারচুপির মাধ্যমে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনে এতো সংখ্যাগরিষ্ট আসনের ব্যবস্থা করে দিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসানো হয়। তাদের তাবেদারি প্রতিষ্ঠার চুড়ান্ত মিশনে তারা হলো সফল।

২০০৯ সালে ২৫শে ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক সেনা কর্মকর্তাদের একত্রিত করে বিডিআর বিদ্রোহ নামক ঘটনা সাজিয়ে ৫৭ জন উর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয় বিডিআর সদরদপ্তর পিলখানায়। বাংলাদেশকে নিয়ে সুদুরপ্রসারি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সেদিন এই নারকীয় হত্যাকান্ড সংগঠিত হয়। কথিত আছে ইন্ডিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার সরাসরি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠাই ছিল তাদের মুল লক্ষ্য। ব্রুট মেজরিটির ক্ষমতার বলে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে তত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি চিরতরে বিলুপ্ত করে নেয় আওয়ামী লীগ। বেগম খালেদা জিয়া বরাবরই ভারতের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সারা দেশে রোড মার্চ, লং মার্চ করে দেশবাসীকে দেশের স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়ার ভারত বিরোধী মনোভাব নিয়ে অনেকে অনেক সময় অনেক তির্যক মন্তব্য করেছেন। ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচন শেখ হাসিনার অধিনে বিএনপি বর্জনের ঘোষণা দিল। কেন বিএনপি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিল তারও সুস্পষ্ট কারণ আছে। জেনারেল এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টী তত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না ঘোষণা দিয়ে তাদের অবস্থানে অনড় থাকতে পারেনি। ইন্ডিয়ার তৎকালীন স্বরাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং বাংলাদেশে সংক্ষিপ্ত সফরে এসে এরশাদের সাথে সাক্ষাৎ করে একজন সুস্থ এরশাদকে অসুস্থ করে হাসপাতালে জোর পূর্বক পাঠালেন। অতপরঃ ১৫৩ জন নির্বাচন ছাড়া বিনা ভোটে সংসদ সদস্য হয়ে গেলেন, এটা ছিল নেক্কারজনক অবিশ্বাস্য গণতন্ত্রের চর্চা। নির্বাচনে আটকে রাখলেন জাতীয় পার্টিকে জোর পূর্বক  কিছু আসন দিয়ে বিরোধী দলে বসানো হলো।  আওয়ামী লীগ ঘোষণা দিলো তারা একটা নিয়ম রক্ষার নির্বাচন করে কিছুদিন পরে আবার অংশ গ্রহন মূলক নির্বাচন উপহার দিবে বলে সমগ্র জাতির সাথে প্রতারণা করে। আওয়ামী লীগকে বিশ্বাস করে বিএনপি ও দেশের জনগন সরল বিশ্বাসে প্রতারিত হয়, তারা ঠিকই ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করে রাখে।

আওয়ামী শুধু প্রতারণা করে খ্যান্ত হয়নি বিরোধী মতের নেতাদের দমিয়ে রাখতে গুম খুন হত্যা সাজানো মিথ্যা মামলায় আসামি করে কাউকে দীর্ঘ মেয়াদি সাজা, কাউকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করে। টুনকো মিথ্যা ফরমায়েশি মামলায় বিএনপির চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে চার দেয়ালে আটকে রাখা। অন্যান্য মামলায় বিএনপি জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের নামে শত শত মামলা দিয়ে গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে থেকে যায়। বিএনপি ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচন বর্জন করে। সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নানাবিধ আলোচনা সমালোচনা চলছিল দেশ বিদেশে। বিএনপির ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত ভুল না সঠিক ছিল দেশের জনগণ এবং আর্ন্তজাতিক  মহলকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো জন্য ২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জননেতা তারেক রহমানের নির্দেশে বিএনপি আবারো অংশ গ্রহণ করে। কী নাক্কারজনক ভোট ডাকাতির ঘটনা দেশবাসী প্রত্যক্ষ করলো! এবার আগের রাতেই ভোট তারা সম্পন্ন করে নিল। ভোটের দিন বিএনপির এজেন্টদের উপর হামলা করে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে তাদের পছন্দের নৌকার পক্ষেভোট নিয়ে নেয়। এতো কলঙ্কিত ভোট ডাকাতি করেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। তার কারণ একটাই তাদের পিছনে আছে ইন্ডিয়ার পরোক্ষ প্রত্যক্ষ সমর্থন। নির্বাচন পরবর্তী সময়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিচক্ষণ তারেক রহমান তার বুদ্ধিদৃপ্ত নেতৃত্ব দিয়ে বিএনপির পাশে দেশের মানুষকে সম্পৃক্ত করেছেন। জনাব তারেক রহমান কেন্দ্র থেকে জেলা উপজেলায় বিএনপি অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কমিটি গঠনে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব নির্বাচনের ব্যবস্থা চালু করে দলকে তৃণমূলের কাছে অত্যন্ত সময়োপযোগী বলিষ্ঠ করে গড়ে তুলেছেন। বিগত বছর গুলোতে বিএনপির কর্মী সমর্থক বৃদ্ধি পেয়েছে। বিএনপির জেলা উপজেলা বিভাগীয় সমাবেশে সরকারের এতো জুলুম নিপিড়ন অনেক শক্তিশালী বাধা উপেক্ষা করে লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ জনগণের অংশ গ্রহন ছিল সরকারের কাছে ইর্শ্বণীয়। ২০২৩ সালে ঢাকা মহাসমাবেশ ছিল সর্বকালের সর্ববৃহত রাজনৈতিক সমাবেশে  পরিবর্তনের দাবী ছিল সারা দেশব্যাপী। বিএনপিকে দূর্বল করে রাখতে বেগম খালেদা জিয়াকে গৃহ বন্দী করে রাখা হয়েছে। নোংরা রাজনীতির প্রতিহিংসার শিকার হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারুণ্য জাগরণের নেতা জনাব তারেক রহমান আজ নির্বাসিত হয়ে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। ইতিমধ্যে তাঁর একমাত্র ভাই আরাফত রহমান কোকোকে নিষ্ঠুর নির্মম নির্যাতন করে ২০১৫ সালে হত্যা করা হয়েছে। এই ফ্যাসিষ্ট সরকারের ক্ষমতা কালে জনাব তারেক রহমানের বাংলাদেশে ফিরে আসা মানেই তার প্রাণ নাশের আশংকা। ভাইয়ের নির্মম মৃত্যু, মা বেগম খালেদা জিয়া জেলে, লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীদের উপর হামলা মামলা গুম খুনের পরেও জনাব তারেক রহমান তার ধৈর্যশীল ডায়নামিক নেতৃত্বের গুণাবলিতে সমগ্র দেশবাসীকে একত্রিত রাখতে পেরেছেন। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে দেশের ৯৫ শতাংশ মানুষ তার নেতৃত্বে শেখ হাসিনাকে চরম ঘৃনা করে ভোট বর্জন করেছে। বিএনপি এবং তারেক রহমান দেশের মানুষের ভালোবাসা সমর্থনে জনপ্রিয়তায় নিঃসন্দেহে সফল। ক্ষমতায় টিকে থাকাটাই শুধু রাজনীতিতে সফলতা নয়, কোটি কোটি মানুষের ঘৃনার মাঝে ক্ষমতা মূল্যাহীন। বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটা বিখ্যাত উক্তি "তোরা যে যা বলিস ভাই, আমি সোনার হরিণ চাই" শেখ হাসিনা সেই সোনার হরিণ আকড়ে রাখতে আজ অন্ধ। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় দেশের মানুষ যদি জানতো ভবিষ্যতে শেখ মুজিবুর রহমান শুধু তার ক্ষমতার জন্য প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বা থাকার লোভে যুদ্ধ করবে। বাকশাল হবে, তার মেয়ে ভবিষ্যতে এতো ঘৃন্য নেতৃত্ব দেবে তাহলে একজন মানুষও স্বাধীনতা যুদ্ধে জীবন দিতো না। আচ্ছা বলুন তো কোথায় আছে স্বাধীনতা? শেখ হাসিনা ভারতের সহযোগিতায় তার ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে বাংলাদেশটাকে আজ অন্ধ বধির বোবা মানুষের দেশে পরিনত করেছে। অবৈধ সরকারের রোষানলে পড়ে সাহসী দেশপ্রেমিক ব্যক্তিরা কারাগারে, নয়তো দেশ থেকে নির্বাসিত, কেউ অতি মাত্রায় নিশ্চুপ থাকতে বাধ্য। সাংবাদিকরা যে কোন জাতির দর্পন, সেই দর্পন যদি বিকৃত হয়ে যায় তাহলে এই জাতির কপালে কলঙ্ক ছাড়া ভালো কিছু থাকতে পারে না।

বিগত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে একজন শেখ হাসিনার পছন্দ মতো ৩০০ আসনে প্রার্থীকে বিজয়ী করানো হয়েছে, তিনি যেখানে নৌকা বিজয়ী করতে চেয়েছেন তাই হয়ছে। কোথাও নৌকার প্রার্থীকে কৌশলে  নীরব রেখে  ডামি  প্রার্থীকে বিজয়ী করা হয়েছে। কোথাও নিজেদের মধ্যে উম্মুক্ত করে দিয়েছেন, জাতীয় পার্টি সহ অন্যান্য দল ব্যাক্তিকে তার পছন্দসই বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন ছিল ননীর পুতুল একদম অসহায়, অনুগত দাস।

বিশ্বের কোন গণতান্ত্রিক দেশে এতো নির্লজ্জ হাস্যকর ডামি মার্কা প্রহসনের নির্বাচন কোথাও হয়েছে? জাতি হিসেবে ধিক্কার জানাবার ভাষা সাহস কি আমাদের আছে? মাত্র ৫ থেকে ৮ শতাংশ ভোটার ভোট প্রদান করেছেন, এখানেই বিএনপি এবং তারেক রহমানের বিজয়। যদিও ক্ষমতা আর বন্দুকের কাছে পুরো দেশবাসী জিম্মি। মানুষের মনের মনিকোঠায় স্থান করে নিয়েছে বিএনপি এবং তারেক রহমান।

আমার আজকের লেখার শিরোনামে চলে আসি, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে রাষ্ট্র মেরামতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অবদান ছিল অপরিসীম। দেশের যে কোন কঠিন দুঃসময়ে সংকটকালীন সময়ে ত্রাণকর্তার ভুমিকায় কখনও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, কখনও বা সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এই জাতির মর্যাদা রক্ষা, উদ্ধার অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছেন। নিকট ভবিষ্যতে তারেক রহমানই হবেন এ জাতির একমাত্র ভরসা। বাংলাদেশের মানুষ মনে করে ভারতীয় তাবেদার এই ফ্যাসিবাদের কবল থেকে জাতিকে মুক্ত করতে গণতন্ত্র পূণঃরুদ্ধারে বিএনপি এবং একজন সাহসী তারেক রহমানের বিকল্প বাংলাদেশের রাজনীতিতে দ্বিতীয় অন্য কোন ব্যক্তি সংগঠন নাই। নিশ্চয়ই মানুষের ধৈর্যের বাঁধ একদিন ভাঙবেই, তারেক রহমানই হবেন নতুন দিনের সোনালী সূর্যোদয়ের বিপ্লবের মহানায়ক। সে দিনের অপেক্ষায় কোটি কোটি মানুষ তাকিয়ে আছে সেই মহানায়কের পথ চেয়ে, কারণ তারেক রহমানই দেশবাসীর শেষ ভরসা।

আসুন ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তারেক রহমানের নেতৃত্বকে আরো সুদৃঢ় শক্তিশালী করে গড়ে তুলি। আমরা প্রাণ খুলে তারেক রহমানের জন্য দোয়া করি মহান আল্লাহ যেন আগামীর নেতৃত্বে তাকে সাহায্য করেন। মাদার অব ডেমোক্রেসি দেশনেত্রী বেগম খালেদা ও প্রিয় নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুদীর্ঘ হায়াত সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। মহান আল্লাহ দেশবাসীর সহায় হউন।

লেখক: মোঃ নিজাম উদ্দিন, সাবেক চেয়ারম্যান উত্তর খুরমা ইউনিয়ন পরিষদ, ছাতক সুনামগঞ্জ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি।